ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের বনভূমি দখল ও উজাড় হচ্ছে মুল্যবান মাদার ট্রি

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :: কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের ,চকরিয়া উপজেলাস্হ খুটাখালী মেদাকচ্ছপিয়া বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চল জাতীয় উদ্যান(ন্যাশনাল পার্ক) এর বনভূমি প্রতিনিয়ত দখল হয়ে গড়ে উঠছে নতুন-নতুন স্থাপনা ।এছাড়া শতবর্ষী মাদার
ট্রি গর্জন গাছকে ক্ষত-বিক্ষত করে, কর্তনের মহোৎসব চলছে । রহস্য জনক কারণে সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ নীরব । তাহলে বনভূমি ও গাছ রক্ষার দায়িত্ব নিবেন কে?এমন প্রশ্ন তুলেন সচেতন মহল।

মেদাকচ্ছপিয়া বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বসতিপূর্ণ এলাকা ঘুরলে দেখা যায়, বিশবছর বা দশবছর পূর্বে পশ্চিম-মধ্যম-পূর্ব গর্জনতলী সহ মহাসড়কের লাগোয়া জাতীয় উদ্যান অফিসের পূর্বে সম্ভাবনাময় লেকের গাঁ ঘেষা বনাঞ্চলে সম্প্রতি সময়ে নতুন-নতুন বেশকিছু পাঁকা দালান, সেমিপাঁকা, মাটির দেওয়া ও কাগজের চাউনি দিয়ে স্হাপনা গড়ে তুলার মহোৎসব চলছে ।

এছাড়াও নলবুনিয়া এলাকা সহ উদ্যানজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় শতবর্ষী মকদার ট্রি গর্জন গাছ প্রথমে ক্ষত-বিক্ষত করে।পরে স্হানীয় প্রসিদ্ধ গাছচোরদের  সাথে চুক্ত করে রাতে আধারে কেটে ফেলে দেয়।

খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ গাছের টুকরোগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়।এতে বনভূমির জায়গা ফাঁকা হলে স্হাপনা নির্মাণের জন্য দখল করে স্হানীয়রা। মেদাকচ্ছপিয়া বনবিটের নার্সারীর লাগোয়া গর্জন ক্ষত-বিক্ষত করার বেহালদশার দেখা মিলে।

ইতিমধ্যে মধ্যম গর্জনতলীতে বসবাসরত বহিরাগত আব্দুল্লাহ নামের প্রবাসীর স্ত্রী সেতারা বেগম (শুকতারা) ফাঁকা দালান, পাশাপাশি ছালামত উল্লাহর সেমিপাঁকা ঘর, প্রবাসী শাহাব উদ্দিনের পিতা কবির আহমদের সেমিপাঁকা এর লাগোয়া পুতুইন্নার সেমিপাঁকা ঘর, ডাঃ মীর আহমদের গেটের সামনে আহমদ হোসেনের কাগজের ছাউনির ঘর, নতুন মসজিদের পূর্বে বাদশার ছেলে সরওয়ারের সেমিপাঁকা ঘর তৈরী কাজ চলছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার ও সিপিজি কমিটির নেতা প্রভাবে কয়েকটি ঘরবাড়ী তৈরী হয়েছে। ছোট-বড় দুই/একটি ঘর বনপাহারার অবহেলায় গড়ে উঠেছে।এভাবে চললে বনভূমি ও গাছ রক্ষার দায়িত্ব নিবেন কে?এমন দাবী সচেতন মহলের।

নাম প্রকাশে অইচ্ছুক কয়েকজন সৎ ভিলেজার জানান, মেদাকচ্ছপিয়া বনবিটে জনবল খুবই কম।যে কারণে তারা কোথাও বনভূমি দখল সহ স্হাপনা নির্মাণে বাঁধা দিতে গেলে জীবন বাঁচানো শংকায় পড়ে। অভিযান চালাতে গেলে সরকারি বনকর্মী ও কয়েকজন ভিলেজার ছাড়া, সিপিজি ও সিএমসির কোন লোক সঙ্গে যায় না। তারা নামে মাত্র বন সম্পদ রক্ষা কর্মী।তবু বন রক্ষায় খুব আন্তরিক মেদাকচ্ছপিয়া বিটে কর্মকর্তা।

গত ১৪ মার্চ মেদাকচ্ছপিয়া উদ্যান অফিস চত্বরে আয়োজিত মেদাকচ্ছপিয়া ও ফুলছড়ির বন ব্যবস্হাপনা কমিটির সদস্যদের সাথে মত-বিনিময় সভায় পরিবেশ,বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন,বন ধ্বংসে ৮০% লিপ্ত জনপ্রতিনিধি ও কিছু অসাধু বনকর্মী।এমন ব্যক্তিদের তালিকা দ্রুত তৈরী করে আইনগত ব্যবস্হা নেওয়ার নির্দেশ দেন উপমন্ত্রী।

এবিষয়ে মেদাকচ্ছপিয়া বনবিট কর্মকর্তা মোঃ শাহীন আলম বলেন, ঘর যদি উঠে থাকে অবশ্যই ব্যবস্হা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক আহমদ বাবুল বলেন, এব্যাপারে আমাকে কেউ আগে কিছুই জানায়নি। তবু স্হাপনা নির্মাণে কাউকে ছাড় নয়। অবশ্যই আমি জড়িতদের বিরোদ্ধে ব্যবস্হা নিতে বলেছি । প্রয়োজনে আমিও তাদেরকে সহযোগিতা করব।

পাঠকের মতামত: